Header Ads

Header ADS

স্বপ্নের রাজ্যের মনীষা পর্ব ২

 

যারা আমার আগের পোস্টটি মিস করেছেন তারা এখান থেকে আগের পর্বটি দেখে নিতে পারেন

রাকিবঃ ঠিক আছে, এখন তাহলে আসি

এই বলে রাকিব চলে গেল। তো মনীষা তার পরিবারের কাছে চলে যায়। আজকে তারা অনেক দুরের একটি দ্বীপে যাচ্ছে।  এরপর পরেরদিন তারা সেন্টমাটিন ত্যাগ করবে।  এখন মনীষার মনে শুধু ওই ছেলেটিই রয়েছে কিভাবে সে সেই ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে পারবে। সে অনেক চিন্তায় পড়ে যায়। এদিকে সন্ধ্যার আগেই তারা তাদের হোটেলে চলে আসে। এদিকে রাকিবরাও ঘুরে তাদের হোটেলে চলে আসে। এখন মনিসা শুধু রাকিবের কোন কন্টাক্ট নাম্বার নেওয়ার ওপেক্ষায় রয়েছে। রাত শেষ হলেই মনীষারা চলে যাবে। রাত্রেই তাদের সঙ্গে মনীষার কথা বলা দরকার। কোনো ভাবেই মনীষা আর তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। রাত গভির হচ্ছে। হটাত মনীষা দেখে রাকিব বের হয়েছে। মনীষা রাকিবকে ইশারা করে। রাকিবেরও মনীষার দিকে চোখ পড়ে যায়। রাকিব বুঝতে পারে যে মেয়েটি তার নাম্বার চাচ্ছে। আচ্ছা আমি দিচ্ছি, রাকিব মেয়েটির উদ্দেশ্যে ইশারা করে। রাকিব একটি কাগজে খুব দ্রুত তার নাম্বার লিখে মনিষাকে দেয়।

হা, এতক্ষণ পর মনীষা একটু শান্ত হতে পারল। কিন্তু মনীষা তো রাকিবকে নয় বরং তার বন্ধুকে পছন্দ করে সেটা বোধ হয় রাকিবও জানে না।

সকালে মনীষাসহ তাদের পরিবার শহরে রওনা দেয়। মনীষা তার রাকিবের বন্ধুকে দেখেই রওনা দিয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে মনীষারা চলে এলো তাদের শহরে। সবাই এখন রেস্ট নিচ্ছে কিন্তু মনীষা রেস্ট না নিয়ে সেই নাম্বার দিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুজচ্ছে, হ্যাঁ, একটু পরে সে পেয়েও গেছে রাকিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।

এখন মনীষার প্রধান কাজ হচ্ছে রাকিবের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে সেই ছেলেটির নাম খুজে বের করা। রাকিবের ফ্রেন্ডলিস্টে অবশ্যই মনীষা সেই ছেলেটাকে খুজে পাবে। কিন্তু মনীষা এখন আর খুজবে না। সে ও একটু রেস্ট নিতে চায়।

পরের দিন সকালে মনীষা পুরো ফ্রেস হয়ে সে নিজের সকল কাজে মনোযোগ দেয়। সে প্রায় ভুলেই যায় যে তাকে আরো একটি কাজ করতে হবে। সন্ধ্যার দিকে মনীষা ফ্রি হয় এবং তার মনে পড়ে তার আরো একটি কাজ বাকি আছে। সে তখনিই ল্যাপ্টপ নিয়ে বসে পড়ে আর সেই ছেলেটিকে খুজতে থাকে। প্রায় চার হাজার মানুষের মধ্যে সেই ছেলেটিকে খুজে বের করাটা সহজ কথা না, কিন্তু মনীষাতো তা করবেই।

২ঘন্টা পর মনীষা ঠিকই খুজে পেল সেই ছেলেটিকে। তার আইডিতে ঢুকে কনফার্ম হয়ে নিল। ছেলের নাম দেওয়া আছে নিরব শিশির। মেয়েটি অবাক হল না কারণ ছেলেটি এমনেও নিরব থাকত সবসময়। মেয়েটি শুধু ভাবতে থাকে নিরব শিশির নামটি সম্পর্কে। নিরব শিশির মানে জানেন,

করে না শব্দ বৃষ্টির মতো

শিশির হবে নিরব ও স্তব্ধ, 

কাজটা কিন্তু বৃষ্টির মতো

তবে কিছুটা ভিন্ন

বৃষ্টি পড়ে অবিরত

শিশির হবে ধোয়ার মতো

ঠান্ডা লাগে শীতের মতো

শিশির বলতে,

ঘাসের আগায় কিছুটা পানির মতো

সকালে লাগে দেখতে ভালো

সূর্যদয়ের জোনাকির আলো

তাই তাকে দেখে আমার 

এই মন জুরালো।

মনীষার আর ভাবনার শেষ হয় না। এগুলো ভেবেই মনীষা আজকে ঘুমাতে যায়। পরের দিন মনীষা নিরব শিশিরকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব পাঠায় (Friend Recust)। মনীষা মনে করেছিল নিরব শিশির এখন তার রিকুয়েস্ট Accept করবে। এই ভেবেই মনীষা প্রতিদিন ফেসবুকে ঢুকতো কিন্তু নিরব শিশির আজকেও একেস্পট করেনি তাকে। এদিকে মনীষা এস এস সি শেষ করে ফেল, ১ বছরের ও বেশি সময় হয়ে গেল নিরব শিশিরকে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে মনীষা। কিন্তু এখনও মনে হয় শিশিরের চোখে পড়ে নি মেয়েটি। 

আজকে মনীষা কলেজে ভর্তি হয়ে ক্লাস করে বাড়িতে এলো। তার মোবাইলে হঠাত করে একটি নটিফিকেশন দেকে মনীষা খুবই অবাক হলো। আর হবে না বা কেন? নটিফিকেশনে লেখা আছে নিরব শিশির আপনার ফেন্ডরিকুয়েস্ট গ্রহণ করেছে।

হয়ত আপনারা ভাবছেন মনীষার কাছে স্মারটফোন এলো কোথায় থেকে। তাহলে আরো একটু সামনে গিয়ে পড়া শুরু করুন। কি দেখতে পাচ্ছেন, মনীষা এস এস সি পাস করেছে আর তখনই মনীষার বাবা তার ছোট বেলার বন্ধুর থেকে একটি নতুন স্মারটফোন উপহার পান। তাই মনীষার বাবা মনিষাকে তার আগের ফোনটি দিয়ে দেন। এখন সেই ফোনেই মনীষার ফেসবুক চালায়।

মনীষা নটিফিকেশনে ক্লিক করে শিশিরকে হাই পাঠায়। আর উত্তরের অপেক্ষায় থাকে। আমি যদি শিশিরের পক্ষে কিছু বলি তাহলে বলতে হয়, শিশির হচ্ছে খুব এক্টিভ একটি ছেলে। সে ফেসবুকে সব সময় ফেসবুকে সময় দেয়। তার কোন কাজ নাই। বাবার হোটেলে খাবে আর ফেসবুকের সময় দেবে। আপনারা যদি তার মেসেঞ্জারের ফ্রেন্ডলিস্ট দেখতে চান তাহলে আপনারা প্রথম ১৫ জনের পরে গিয়ে তার বেস্টফ্রেন্ড রাকিবকে দেখতে পাবেন। আর উপরের যে ১৫ জনের কথা বললাম তারা সবাই মেয়ে। তার বেস্ট ফেন্ড রাকিব যতক্ষণ হাই দেবে না ততক্ষণ শিশির হেলো পাঠাবে না। আর উপরের গুলো উপরে থাকার কারণ শিশির তাদেরকে সব সময় কিছু না কিছু পাঠাতেই থাকে। তারা উত্তর দিক বা না, দিক,শিশির আজকে একটু সত্যিই অবাক হলো কারণ শিশির সব মেয়ে তাদের আগেই হাই পাঠিয়েছে। কিন্তু মনীষা সর্বপ্রথম যে কিনা শিশিরকে হাই পাঠিয়েছে, তাই শিশির এই মেয়েটিকে মার্ক করল। এবার শিশির ও হ্যালো পাঠালো।

এবার শুরু হলো তাদের পরিচয় পর্ব। মনীষা তো অপেক্ষায় ছিলো কখন শিশির response করবে।

মনীষা এবার জিজ্ঞেস করল আপনি কেমন আছেন?

শিশিরঃ হ্যাঁ, আমি ভালো আছি, আপনার কি অবস্থা?

মনীষাঃ জি আমি ও ভালো আছি।

মনীষা আর কিছু বলবে না এখন, কারণ প্রথমবারেই সব জানতে নাই।

শিশিরের পক্ষ থেকে আর একটি প্রশ্ন চলে আসল মনীষার কাছে। আপনার বাসার সবাই কেমন আছে?

মনীষা ঠিক করল আজকে আর সে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে না, মনীষা শিশিরের প্রফাইল চেক করে আজকে ঘুমিয়ে গেল।

শিশিরও কম চালাক না, সে এ পর্যন্ত অনেক মেয়েদের সঙ্গে ফেসবুকে কথা বলেছে। তার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে এই বিষয়ে। যদি বিরক্ত হয়ে যায় তাই শিশির ও আজকে আর কোন প্রশ্ন করল না।

কালকে দেখে নেবে বলে। শিশিরও লাইট বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ল। পরেরদিন সকালে মনীষা সেই প্রশ্নের উত্তর দিল এবং একাই প্রশ্ন সে শিশিরকে করল। জি আমাদের বাসার সবাই ভালো আছে। আর আপনার বাসার সবাই কেমন আছে?

No comments

Powered by Blogger.