Header Ads

Header ADS

রাস্তার মানুষটি পর্ব ১


 

গভীর রাত্রে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে তখন আমার শরীর থেকে পানি পরতে ছিল মানে ঘাম পরতে ছিল, আর তখন আমার ঘুম ভেঙে গেল। বাতাস খাইতে যাচ্ছিলাম রাস্তার দিকে, আর তখনই হঠাৎ! দেখলাম পেছনের দিকে, একটা মানুষ কিছু জিনিস নিয়ে বসে আছে। আমার মনে হলো সে কিছু একটা করতেছিল। আমি তা বুঝলাম তার নরা-চড়া দেখে। আমি ভয়ে তার কাছে গেলাম না, কারণ আমি তখন একা ছিলাম এবং ঘুম থেকে ওঠার কারণে আমার শারিরীক অবস্থা ঠিক ছিল না, মানে শরিরের শক্তি কম ছিল। আমি দূর থেকে ঐ মানুষটির কাজ কর্ম দেখছিলাম। হঠাৎ! দেখলাম সে উদাও। আমি ভাবলাম এত তারাতারি সে কোথায় চলে গেল। আমার ভিতরে একটা ভয়ের শক্তি এসে গেল। তখন আমি ভয় কাটানোর জন্য মানুষটিকে চোর ও ডাকাত ভাবলাম এরপর ও আমর শরিরে ভয়ের শক্তিটা পুরাপুরি কাটল না, তাই আমি অর রাস্তায় বেশিক্ষণ থাকলাম না। বাসায় চলে এলাম। এতক্ষণে বিদ্যুৎ চলে এসেছে তাই আমি একটা লম্বা এবং মজার ঘুম দিলাম।

সকাল বেলার গোলমাল

সকাল বেলা আমার ঘুম ভাঙলো পাশের বাড়ির হইচইয়ের কারণে বা গোলমালের কারণে, তখন ঘড়িতে দেখলাম সকাল দশটা বেজে গেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে ওই বাড়িতে যাওয়ার জন্য হাত মুখ ধুয়ে রেডি হলাম। তখন আমার কানে একটি শব্দ এলো পাশের বাড়ি থেকে আর সেই শব্দটি হচ্ছে চোর এসেছিল। আমি সেই বাড়িতে গেলাম। যাওয়ার পর শুনলাম চোর এসেছিল এবং ঘরের যত কাপড় ছিল সেখান থেকে পুরাতন কাপড় ছিল সেগুলো বেছে বেছে নিয়ে গেছে আর একটি কথা শুনলাম তারা মনে করতেছে চটি বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে এসেছিল। আমি ভাবলাম চটি রাত্রে আমাকে ভয় দেখিয়ে শুধুমাত্র ছিরা ফাটা কাপড় গুলো নিয়ে গেল? সে চাইলে তো এদের ঘরে এত সুন্দর বড় একটি রঙিন টিভি ছিল এটা নিয়ে যেতে পারতো, কিন্তু সেটা নিয়ে গেল না কেন? আবার আমার কানে এল আসলে চর্চার অভ্যাস ভালো আমি জিজ্ঞাসা করলাম চুরির অভ্যাস আবার ভালো হলো কিভাবে? আ বেগম মানে আমার আন্টি বললেন বাবা আসলে চোর হিসেবে সে ভালো কারণ সে শপ্তাহে 1 বার আসে তা হল বৃহস্পতিবার রাত্রে। এবং চোর আসলে শুধু ছেঁড়াফাটা কাপড় নিয়ে যায় আর প্রত্যেক বৃহস্পতিবার এ আমাদের ঘরে চুরি হয়। আর আমার মনে হলো সেদিন রাত্রে ছিল বৃহস্পতিবার রাত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম সে কি প্রতি বৃহস্পতিবারই আসে? বললেন আন্টিঃ হ্যাঁ। সে প্রত্যেক বৃহস্পতিবারেই আসে। তোমার আংকেল বাড়িতে থাকলে তোমার আংকেল বাড়িটি বৃহস্পতিবার রাত্রে পাহারা দেয় আর তখন চোর যে কখন কোথায় থেকে আসে তা কেউ বলতে পারে না। আসলে সকালে বোঝা যায় চোর এসেছিল আর কোন দিক দিয়ে এসেছিল তা বোঝা যায় সহজে। আমি বললাম চোর হিসেবে তাহলে সে ভালো কিন্তু ভালো বলে আমরা কি তার খোঁজ রাখব না বা তাকে ধরবো না? আমাদের অবশ্যই তাকে ধরতে হবে সে তো একটা চোর| আমাদের একটা বুদ্ধি বের করতে হবে| সন্ধ্যায় আঙ্কেল আসলে আমরা সবাই বসে একটা বুদ্ধি বের করব| এখন তাহলে যাই আন্টি| আচ্ছা যাও বাবা|

সন্ধ্যার বৈঠক

হঠাৎ আমি আংকেল কে জিজ্ঞাসা করলাম আঙ্কেল চোরটিকে কি আপনি চেনেন তিনি বললেন না আমি বললাম কোন বার দেখেছেন তিনি বললেন না আমি বললাম চটি কে আমরা জানিনা চিনিনা আশেপাশের কেউ দেখেনি আর কারো ঘরে চুরি হয় না শুধু আপনাদের ঘরে চুরি হয়| এটাতো রহস্য ঘটনা মনে হচ্ছে| সে চটি হয়তো বুদ্ধিমান মনে হচ্ছে| কারণ সে কখন কোন পাশে আসে তা কেউ জানে না| কিন্তু চলে গেলে তা স্পষ্ট বোঝা যায় সে হয়তো বিজ্ঞান বিষয়ে কিছু বোঝেনা সে পড়ালেখা জানে| তাহলে আমাদের একটি কাজ করতে হবে সেটি হল চোরটির সাথে দেখা করতে হবে| আমরা কিভাবে চোরটির সাথে দেখা করতে পারি। সেটি নিয়ে চিন্তা করেন। আন্টি বললেনঃ চোরের সাথে দেখা করবেন তাহলে একটি বুদ্ধি আমি দেই তা হচ্ছে চোর কে চিঠি লিখতে হবে। আসলে চোরের বুদ্ধি দেখে কেউ হয়তো বলবেন না সে পড়ালেখা পারে না। মনে হবে সে পড়ালেখা পারে। তাই হয়তো আন্টি চিঠি লিখতে বললেন। প্রথমে আমার মত ছিল না। সবাই যখন মত দিল তাই আমিও মত না দিয়ে পারলাম না। আমরা চোরের কাছে চিঠি লিখলাম এই ভাবেঃ
শ্রদ্ধেয় চোর মিয়া,
আশাকরি চোরমিয়া ভালো আছেন কারণ ভাল না থাকলে চোরি করতে আসতে পারতেন না। আসলে আমরা ভাবতেছি আপনাকে ধরে পিটানি দেব, কিন্তু আমরা আপনার সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কিছু জানিনা। তাই বলছি আপনি যদি বলতেন আপনার নামটা কি তাহলে হয়তো আপনাকে চিনতাম। আপনি আমাদেরকে আপনার নাম ঠিকানা মোবাইল নাম্বার দিলে আমরা খুশি হতাম।

অতএব, আপনি পরিচয় দিতে হবে। না হলে আমরা পুলিশকে দিয়ে তোমাকে পেটাব।
ইতি
অত্র চোরশিকার বাড়ি

চোরের কাছে চিঠি লেখার পর হঠাৎ করে নানী বললেন সে তো চোরি করে, সে কি আর পড়া লেখা করেছে তোমাদের মোতো। সে যদি পড়ালেখা করতো তাহলে সে তো চাকরি করতো। নানি মানে আমার আন্টি এ এর মা। নাম তার বি খাতুন। বয়স প্রায় ৬০ বছর পার হয়ে গেছে। তিনি আবার বললেন তোমরা পড়ালেখা করতে করতে তোমাদের বুদ্ধি নেই কারো, আচ্ছা যখন লিখে ফেলেছো তখন লাগিয়ে দাও পোস্ট করিও না সেই চিঠিটা বৃহস্পতিবার এ আমাদের দরজার ওপর লাগিয়ে দিও। যদি কোন প্রকার কিছু উত্তর বা কিছু পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবারের চিঠি

এরপর ভালই গেল মানে আমাদের পাড়ায় আর কারো বাড়িতে চুরি হলো না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা সবাই চিঠিতে লাগিয়ে দিলাম ঘরের দরজায়। সেইদিন রাত্রে আমি আর ঘুম দিলাম না। কারণ আমি দেখতে চাইলাম চোরটিকে? কোন রহস্য কি আছে আসলে? আর একটা কথা আমার মনে হয় আন্টি বলছিল ছুটে চলে গেলে নাকি সবকিছু স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। কিভাবে? তাই হচ্ছে আমার প্রশ্ন। কিভাবে তারা বুঝতে পারে? আচ্ছা এখন এসব কথা থাক। প্রশ্নটা আন্টিকে আমি পরে করবো। ঠিক বারোটার সময় রাস্তায় বের হলাম। হঠাৎ! দেখলাম চোরটা। তখন আমি অবাক হলাম তার শরীরের পোশাক দেখে, কারণ তার শরীরের পোশাক দেখে মনে হচ্ছে, সে যেন কোন অফিসার।কিন্তু আমার মনে হলো সেই চোর। কারণ তার লক্ষণগুলো চোরের মত। এখন সময় 12:30 মিনিট এতক্ষনে আমার পাশের বাড়ির সবাই ঘুম। ছোটা কি করলো! প্রথমে একটা দরজার সামনে দাঁড়ালো। আমার মনে হচ্ছিল চোরটা কিছু পড়ছে। কিন্তু সে চুরি করবে এমনটা মনে হলেও সে কে তা জানার জন্য আমি সোজা তার মুখে টর্চ মারলাম। কারণ চাঁদের আলোয় ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছিল না। টর্চ মারার সাথে সাথে দেখলাম সে আমাদের অন্যপাশের ভারাটি, সরকারি অফিসের কাজ করে তার নাম সি। আমি তাকে দেখে সাহস পেয়ে তার কাছে গেলাম। সে আগে থেকেই আমাকে চিনে ছিল কারণ তখন আমি লাইটের নিচে ছিলাম। গিয়ে দেখি তিনি একটু একটু কাপতেছেন।

বললাম কিরে ভাই, আপনি এত রাত্রে কোথায় থেকে?

সে বললঃ আমি আসলে মানে- না- বলা যাবে না।

আমি বললাম আসলে কি হয়েছে বলবেন তো।

সে বলল না ভাই আমি বলতে পারব না।

আমি বললাম ভাই দেখো আমি তোমার নিজের ভাইয়ের মত না।

হ্যাঁ।

তাহলে আমাকে বল কি হয়েছে।

সে বলল তাহলে সত্য কথাটা শোনো।

আমি স্বপ্নে একটা মানুষকে দেখি। আর তাকে আজ আমি বাস্তবে দেখেছি।

তার চেহারা কিরকম?

তার চেহারা ভয়ঙ্কর দেখতে, তার হাতের আঙ্গুলে একটা ছেঁড়া, আংগুলের অর্ধেকটা লেগে আছে। আংগুলের সাথে। সেখানে রক্ত পড়তেছে। কি ভয়ংকর। আমি আর বলতে চাই না।

আপনি বললেন আপনি রাত্রে স্বপ্ন দেখেছেন সেখানে কি দেখেছেন?

আসলে আমি সেখানে রাত্রে স্বপ্নে দেখেছি যে আমাদের পাশের বাড়ির ছাদে একজন লোক বসে আছে।

(সে পাশের বাড়ির ছাদ বলতে আমি এই বাড়ি বোঝাচ্ছে।)

আর আমি স্বপ্নের ভিতরে লোকটির কাছে গেলাম। তার চেহারার কথা তো তোমাকে বলেছি আগে।

আমি শুধু তাকে হ্যাঁ, হ্যাঁ বলতে থাকলাম এবার তাকে বললাম তারপর, লোকটি আমাকে বলল আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম! আপনি আমার নাম জানলেন ক্যামনে। তিনি বললেন আমি সব জানি। তিনি বললেন আসলে এ বাড়িতে একটি সমস্যা আছে। আমি শিখে বললাম কি সমস্যা আছে! তা কিসে তোমাকে বলেছিল। সে বলল আমাকে আর কিছুই বলে নাই। ও সে তোমাকে আর একটা কথা বলেছিল, তা তোমাকে বলা যাবে না। আরে বলোনা। আচ্ছা শোনো তাহলে। তিনি আরো বললেন তুমি যদি এই বাড়ি আজ রাতে পাহারা দাও তবে আমি তোমাকে এক ধরনের শক্তি দিব, আর দেবো টাকা। সে আমাকে বলল তুমি তো জানো আমি রহস্য ঘটনা বিহিত করার চেষ্টা করি। আর এই যে স্বপ্ন আমি দেখি তার রহস্যময় মনে হয় আমার কাছে। তাই আমি এখানে চলে আসি এবং আষাঢ় সময় স্বপ্নে দেখা মানুষটির মতো কাউকে দেখতে পাই। আর আসার পর দেখলাম দরজায় কি যেন লেখা রয়েছে তাই এখানে আমার শরীরটা কাঁপতেছে যদি এখানে অন্যরকম রহস্য কিছু লেখা থাকে। তাই আমি একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এখন আর আমার ভয় নেই। এখন যখন আপনি আছেন তখন আর চিন্তা কিসের পরেই দেখা যাক। এই কাগজটি মানে যে চেষ্টা আমরা পরতেক দরজার সামনে লাগিয়ে দিলাম সেটি পর আরম্ভ করল লোকটি। আমি আর কিছু বললাম না। যে চিঠিটা আমি লিখেছি, তিনি টা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লেন আর হাসি শুরু করলেন আর আমাকে লক্ষ্য করে বললেন এই যে দেখুন এবারের মানুষগুলোর কান্ড তারা নাকি আর কাউকে পেলাম না চিঠি লিখে দেয়ার জন্য শেষ নাকি একটা চোরকে চিঠি লিখল। তিনি কতক্ষণ কি ভাবলেন তারপর বললেন ও বুঝেছি এবার গল্পটা। এ বাড়িতে চোর কে চিঠি লিখে দেয়া হয়। আমি চুপ করে থাকলাম আমার কিছু বলার ছিল না তাকে, কারণ চোরকে নিয়ে আমি এখনো রহস্য মধ্যে পড়ে আছি। আমরা যেটা লিখেছি তা দেখলে হয় হাসি আসবে, কারণ ছোরকে যে সম্মান দিয়ে চিঠি লেখা হয়েছে তা।

No comments

Powered by Blogger.