বিজ্ঞানের মজার প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব ৪
আকুল ভাই
বিজ্ঞানের মজার প্রশ্ন
প্রঃ। তড়িতের ইলেকট্রনীয় মতবাদ কি?
বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণার পর সিদ্ধান্ত করেন যে পদার্থ কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমাষ্টি এদের বলে পরমাণু । পরমাণুর গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা হল, এর মাঝখানে রয়েছে নিউক্লিয়াস, আর এর চারদিকে ঘুরছে ইলেকট্রন নামের কণিকা। নিউক্লিয়াসে আছে আরও দুটি কণিকা প্রােটন ও নিউট্রন। ইলেকট্রনকে ঋণাত্মক কণিকা ধরা হয়। ইলেকট্রনের তড়িতের পরিমাণ প্রােটনের ধনাত্মক তড়িতের সমান। কিছু ইলেকট্রন সহজেই পরমাণু থেকে বিচ্ছিন্নও হতে পারে যাদের বলে মুক্ত ইলেকট্রন।
কোন পদার্থে ইলেকট্রনের ঘাটতি হলে বলা হয় পদার্থটি ধনাত্মক তড়িৎগ্রস্থ। আর বেশি হলে বলা হয় ঋনাত্মক তড়িগ্রস্থ। এটাই হল পদার্থের ইলেকট্রনীয় মতবাদ।
ইলেকট্রন নিজের অক্ষের চারদিকে লাট্টুর মত ঘুরতে পারে। প্রতিটি ইলেকট্রনে তড়িতের পরিমাণ হল 4.8036×10-10 e.S.u. প্রতি ইলেকট্রনের ভর হল
হাইড্রোজেনের পরমাণু ভরের 1/1840 অংশ বা 3 x 10-28 গ্রাম।
প্রঃ। তড়িতাধান সম্পর্কিত কুলম্বের সূত্র কি?
( কুলম্বের সূত্র হল :
দুটি সমতড়িতের মধ্যে বিকর্ষণ আর বিপরীত তড়িতের মধ্যে আকর্ষণ ঘটে। অতি ক্ষুদ্র দুটি তড়িৎগ্রস্থ বস্তু পরস্পরের উপর যে বলপ্রয়ােগ করে তা বস্তুদুটির আধানের পরিমাণের গুণফলের সঙ্গে সমানুপাতে ও বস্তু দুটির দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়। একে কুলম্বের সূত্র বলে ।
q1 ও q2 আধানগ্ৰস্ত বস্তু দুটি পরস্পরের থেকে r দূরত্বে থাকলে আর বলের মাপ F হলে কুলম্বের সূত্র অনুযায়ী F 00 q1q2/r2 বা F 00 q1q2 যেখানে k একটি ধ্রুবক।
k-এর মান মাধ্যমের উপর নির্ভর করে। একে বলে ডাই-ইলেকট্রিক ধ্রুবক।
প্রঃ। একক আধান কি?
দুটি ক্ষুদ্র বস্তু যদি বায়ু মাধ্যমে পরস্পরের কাছ থেকে 1 সে. মি. দূরে থেকে পরস্পরকে 1 ডাইন বল দিয়ে আকর্ষণ করে তাহলে এদের প্রতিটিকে বলে একক আধান।
সি. জি.এস. পদ্ধতিতে এই এককের নাম ইলেকট্রোস্ট্যাটিক ইউনিক e.S.u. le.s.u. খুবই ছােট। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বড় একক কুলম্ব ব্যবহার করা হয়।
1 কুলম্ব = 3x109 e.s.u.
প্রঃ। বিদ্যুৎ পূর্ণ তার স্পর্শে শক লাগে কেন?
মানুষের শরীর বিদ্যুৎ পরিবাহী হওয়ায় প্রবাহিত বিদ্যুৎ শরীরের মধ্য দিয়ে মাটিতে প্রবেশ করে । এই জন্যই শক লাগে । অপরিবাহী রবার বা কাঠ ইত্যাদিতে দাঁড়ালে শক লাগে না
প্রঃ। ইলেকট্রিক ফিল্ড বা তড়িৎ বলক্ষেত্র কি?
তড়িৎগ্রস্ত কোন বস্তুর চারদিকে যে অঞ্চলের মধ্যে এর প্রভাব অনুভূত হয় সেই অঞ্চলকে তড়িৎগ্রস্ত বস্তুর বলক্ষেত্র বা ইলেকট্রিক ফিল্ড বলে ।
প্রঃ। ধনাত্মক আয়নগুলি সহজে চলাচল করতে পারে না কারণ এগুলি (ক) ভারী, (খ) ধনাত্মক বিবাহিত, (গ) চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা আহিত হয় না। কোনটি সত্যি?
(ক) সত্যি ।
প্রঃ। তড়িৎবিভব কাকে বলে?
তড়িৎ বিভব হল বস্তুর এমন অবস্থা যা থেকে বোঝা যায় কোন তড়িতাহিত বস্তু অন্য কোন তড়িতাহিত বস্তুকে তড়িৎ প্রদান করবে বা অন্য কোন বস্তু থেকে তা গ্রহণ করবে। এই দুটি বস্তুকে পরিবাহী তার দিয়ে যুক্ত করলে তড়িৎ প্রবাহ ততক্ষণই চলবে যতক্ষণ না দুটির তড়িৎ বিভব সমান হয়।
প্রঃ। তড়িৎ বিভবের একক কি?
কোন বিন্দুতে বিভব এক ভােল্ট হবে যদি এক কুলম্ব আধান অসীম থেকে ওই বিন্দুতে আনতে এক জুল কাজ করা হয়।
. ১জুল
.. 1 Volt = ১কুলম্ব
কিন্তু 1 জুল = 10 আর্গ ও 1 কুলম্ব =3x 10° e.s.u. . 1Volt = 300 e.s.u. প্রঃ। 30 ও 20 e.s.u. দুটি আধানকে যদি 10 সে.মি. দূরে রাখা হয় তাহলে এদের
মাঝখানের বিকর্ষণ বল হবে। (১) ৫ ডাউন (২) ৬ ডাইন? • আমরা জানি বিকর্ষণ বল F x 492
এখানে q=30 e.s.u. q2 = 20 e.s.ur = 10 সে.মি., k = 1
. F=30 x 20s * 102= 6
প্রঃ। নিয়ন বাতিতে বিদ্যুৎ পরিবহন ঘটে (ক) গামা রশ্মির মাধ্যমে, (খ) ভাস্বরতারজন্য, (গ) আয়ন ও ক্যাথােড রশ্মির
জন্য, (ঘ) প্রতিভার জন্য। কোন্টি ঠিক?
(গ) ঠিক।
প্রঃ। তড়িৎ প্রবাহ কাকে বলে?
সব রকম পরিবাহী পদার্থের মধ্যেই কিছু কিছু মুক্ত ইলেকট্রন থাকে। দুটি আলাদা বিভব যুক্ত পরিবাহীকে তার দিয়ে যুক্ত করলে ধনাত্মক আধান উচ্চ বিভব থেকে কম বিভবের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। ঋণাত্মক আধান প্রবাহিত হয় উল্টোদিকে। এই প্রবাহ চলে যতক্ষণ পর্যন্ত বিভব সমান না হয়। কোন ভাবে যদি বিভব পার্থক্য কোন নির্দিষ্ট মাত্রায় বজায় রাখা যায় তাহলে তড়িৎ প্রবাহ চলতে থাকে। একেই বলে তিড়ৎ প্রবাহ । তড়িতের আধানের প্রবাহের হারকেই তড়িৎ প্রবাহের পরিমাপ ধরা হয়। t সেকেন্ডে যদি Q কুলম্ব আধান পরিবাহীর মধ্য দিয়ে সঞ্চালিত হয় তাহলে, তড়িৎ প্রবাহ C = 3 হবে । কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ ঘটলে এর তিনটি ক্রিয়া হয় যেমন (১) চৌম্বক প্রভাব (২) তাপীয় প্রভাব (৩) রাসায়নিক প্রভাব ।
প্রঃ। তড়িৎ কোষ কি? তড়িচ্চালক বল কাকে বলে?
তড়িৎ প্রবাহ ঘটে বিভব পার্থক্যের জন্য। বিভব পার্থক্য বজায় রাখার জন্য রাসায়নিক উপায় নেওয়া হয়। যে ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রাসায়নিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে বলে তড়িৎ কোষ বা ইলেকট্রিক সেল । কোন পাত্রে জলমিশ্রিত সালফিউরিক অ্যাসিড দ্রবণের মধ্যে একটি তামা ও দস্তার পাত রেখে তার দিয়ে যুক্ত করলে তামার পাতে উৎপন্ন ধনাত্মক তড়িৎ দস্তার পাতের দিকে প্রবাহিত হয়। ইতালীয় বিজ্ঞানী ভােল্টা প্রথম এই তড়িৎ কোষ তৈরি করছিলেন বলে একে ভােল্টীয় কোষও বলা হয়। সরল কোষের তামা ও দস্তার পাত দুটিকে তার দিয়ে যুক্ত না করলে তাদের মধ্যে যে বিভব পার্থক্য থাকে তাকেই বলে তড়িচ্চালক বল ।
প্রঃ। ব্যাটারী বা ড্রাইসেল কি?
ব্যাটারী বা ড্রাইসেল বা নির্জল কোষ হল সাধারণতঃ টর্চ, রেডিও ইত্যাদিতে যে ব্যাটারী বা কোষ ব্যবহার করা হয় তাই। একদিক বন্ধ একটা দস্তার পাত্র এর ধারক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি কোষের ঋণাত্মক মেরুর কাজ করে। একটি কাপড়ের থলেতে গুড়াে কার্বন ও ম্যাঙ্গানীজ ডাই-অক্সাইড রেখে তার মধ্যে একটা কার্বন দন্ড রাখা হয়। দুটির মাঝখানে রাখা হয় কাগজ। কার্বন দন্ড ধনাত্মক মেরুর কাজ করে। থলি ও দস্তার পাতের মাঝখানে কাঠের গুঁড়াে, প্লস্টার অফ প্যারিস, অ্যামােনিয়াম ক্লোরাইড ও জল দিয়ে বানানাে লেই দিয়ে করা হয়। এই ধরনের কোষে জল থাকে না বলে একে নির্জল কোষ বলে।
এই কোষের তড়িচ্চালক বল 1.5 ভােল্ট।
প্রঃ। ওহমের সূত্র কি?
কোন পরিবাহীর তাপমাত্রা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে তাদের মধ্যে তড়িৎপ্রবাহের মাত্রা পরিবাহীর দুপ্রান্তের বিভব বৈষম্যের সমানুপাতিক। VA আর VB যদি A ও B পরিবাহীর দুপ্রান্তের বিভব হয় আর প্রবাহিত তড়িৎ মাত্রা 1 হলে হবে,
100 VA- VB বা VA-VB= IR
R একটি ধ্রুবক। একে বলে অই-এর রােধ বা Resistance. 1VA - VB/R =wefe `elg"/tiva
প্রঃ। হিটারে তামার তার ব্যবহৃত হয় না, কথাটি ঠিক না ভুল?
হিটারে তামার তার ব্যবহৃত হয় না কথাটি ঠিক কারণ তামা উচ্চতাপে গলে যায়। তামার গলনাঙ্ক ১০৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
প্রঃ। অ্যাম্পিয়ার কাকে বলে?
কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হয় তাকে বলে তড়িৎ প্রবাহ। তড়িৎ প্রবাহের ব্যবহারিক এককের নাম অ্যাম্পিয়ার। কোন পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যদি সেকেন্ডে 1 কুলম্ব তড়িতাধান অতিক্রম করে তাহলে পরিবাহীর প্রবাহমাত্রাকে এক অ্যাম্পিয়ার বলা হয়।
প্রঃ। আন্তর্জাতিক অ্যাম্পিয়ার কি?
সিলভার নাইট্রেটের কোন দ্রবণে যদি এমন তড়িৎপ্রবাহ পাঠানাে যায় যাতে প্রতি সেকেন্ডে 0.001118 গ্রাম সিলভার ঋণাত্মক তড়িৎ দ্বারে জমা হবে তাহলে ওই প্রবাহকে আন্তর্জাতিক অ্যাম্পিয়ার বলে।
প্রঃ। রােধ কাকে বলে? রােধা কি?
পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য পরিবাহির মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় তাকে পরিবাহীর রােধ বলে। পরিবহীর রােধ নির্ভর করে :
(১) পরিবাহীর দৈর্ঘ্য, (২) পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদ, (৩) পরিবাহীর উপাদান, (৪) পরিবাহী তাপমাত্রা, (৫) অন্যান্য ভৌত অবস্থার উপর।
একক দৈর্ঘ্য ও একক ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোন পরিবাহীর রােধকে এই পদার্থের রােধাঙ্ক বা আপেক্ষিক রােধ বলে। এর একক হল ওহম সেন্টিমিটার।
প্রঃ। কোন তারের প্রস্থচ্ছেদ দ্বিগুণ করলে রােধ অর্ধেক হয় আর প্রস্থচ্ছেদ অর্ধেক করলে রােধ দ্বিগুণ হয়’ কথাটি ঠিক কি?
হ্যা ঠিক। এই জন্যই সরু তারের রােধ বেশি, মােটা তারের রােধ কম।
প্রঃ। তামার রােধাঙ্ক 1.62x10-6 কথাটির মানে কি?
কথাটির মানে হল ১ সে.মি. দীর্ঘ 1 সে.মি. প্রস্থ ও 1 সে. মি. উচ্চতাবিশিষ্ট একটি ঘনকের বিপরীত দুটিতলের রােধ হল 1.62×10-6 ওহম।
প্রঃ। তড়িৎ প্রবাহ হল (১) ইলেকট্রনের গতি, ধনাত্মক আয়নের নয়, (২) ধনাত্মক আয়ন বা ইলেকট্রন এই দুটির গতি, (৩) ধনাত্মক আয়নের গতি ইলেকট্রনের নয়, এর কোনটি ঠিক?
এর মধ্যে (২) ঠিক। ধনাত্মক আয়ন তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে ইলেকট্রনও তাই করে। অতএব, ইলেকট্রন বা ধনাত্মক আয়নের গতি বা দুটিরই গতি তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে।
apnader kisu janar thakle bolen
ReplyDelete