Header Ads

Header ADS

বিজ্ঞানের মজার প্রশ্ন ও উত্তর

 আকুল ভাই

বিজ্ঞানের মজার প্রশ্ন


প্রঃ। হীরা ঝকঝক করে কেন?

হীরার প্রতিসরাঙ্ক খুব বেশি প্রায় 2.47 এর সংকট কোণ 23°53। সাধারণতঃ হীরাকে এমনভাবে কাটা হয় যাতে আলােকরশ্মি হীরার কোন দিকে ঢুকলে নানা দিকে অসংখ্য পূর্ণ প্রতিফলন ঘটে (আভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন)। অত্যন্ত ছােট সংকট কোণ হওয়ায় এরকম কাটা সম্ভব। আলােকরশ্মি নির্গত হওয়ার মত খুব কম দিক থাকে অর্থাৎ স্ফটিকের মধ্যে প্রতিফলন কোণ সংকট কোণের চেয়ে ছােট হয়। এর ফলে হীরার মধ্যে যে আলাে ঢােকে নির্গত হতে পারে মাত্র কয়েকটা দিক থেকেই। এই জন্যই হীরা ঝকঝক করে যেহেতু আলাে বের হয় ঘন হয়ে। 

প্রঃ। মরীচিকা কি?

( আভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনের জন্য উষ্ণ মরুভূমি এলাকায় আর শীতপ্রধান দেশের মেরু অঞ্চলে দূরের বস্তু সম্বন্ধে যে দৃষ্টিবিভ্রম দেখা যায় তাকেই বলে মরীচিকা। মরুভূমিতে দিনের বেলায় প্রচন্ড সূর্যতাপে বালির কাছাকাছি থাকা বায়ুর স্তর সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যত উপরে ওঠা যায় তাপ ততই কমে। উত্তপ্ত হওয়ায় বায়ুর আয়তন বাড়ে আর ঘনত্ব কমে। একেবারে নিচে বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে কম, যত উপরে ওঠা যায় ঘনত্ব তত বাড়ে। এতে বায়ু স্তরের প্রতিসরাঙ্ক উপর থেকে নিচের স্তরের দিকে ক্রমশঃ কমে আসে। এইভাবে নেমে আসার সময় আলােকরশ্মি উপরের ঘন মাধ্যম থেকে নীচের লঘু মাধ্যমে প্রতিসৃত হয়ে চলে। প্রত্যেক স্তরে প্রতিসৃত হওয়ার সময় আলােকরশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায় আর আপতন কোণ প্রত্যেক স্তরে আগের স্তরের চেয়ে বেশি হবে। এইভাবে এমন সময় আলেস যখন আলােকরশ্মি প্রতিরসণ না হয়ে পূর্ণ প্রতিফলন ঘটে। পূর্ণ প্রতিফলিত রশি এবার উপরের দিকে ওঠে। এ অবস্থায় আলােকরশি দর্শকের চোখে মনে হবে যেন বালিস্তরের নিচের কোন জায়গা থেকে আসছে, প্রতিবিম্বও উল্টো কাপা কাপা । গাছের উল্টো প্রতিবিম্ব দেখায় দর্শকের মনে হবে গাছের সামনে জলাশয় রয়েছে। গাছের কাছে গেলে দেখা যাবে যে ব্যাপারটা পুরাে দৃষ্টি বিভ্রম। এটাই মরীচিকা । মেরু অঞ্চলে ও এরকম হয়। এক্ষেত্রে বাস্তব প্রতিবিম্ব শূন্যে ঝােলানাে মনে হয়।

প্রঃ। লেন্স কি? লেন্সের বক্রতাকেন্দ্র, প্রধান অক্ষ,মুখ্য ফোকাস ও ফোকাস দূরত্ব কাকে বলে?

দুটি গােলীয় বা একটি গােলীয় ও একটি সমতল তল দিয়ে সীমাবদ্ধ স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে বলে লেন্স। লেন্সের তল দুটি গােলীয় হলে এই গােলীয়তলের কেন্দ্রকে বক্রতাকেন্দ্র বলে। লেন্সের তল দুটি গােলীয় হলে এই দুই পিঠের  বক্রতাকেন্দ্র সংযােজক সরলরেখাকে বলে প্রধান অক্ষ। উত্তল লেন্সের প্রধান অক্ষে এমন এক বিন্দু রয়েছে যে বিন্দু থেকে আপাত অপসারা আলােকরশ্মিগুচ্ছ লেন্স থেকে প্রতিসৃত হয়ে প্রধান অক্ষের সমান্তরালে লেন্স থেকে নির্গত হয়। এই বিন্দুকে প্রথম মুখ্য ফোকাস বলে। লেন্সের আলােককেন্দ্র থেকে মুখ্য ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে ফোকাস দূরত্ব বলে। 

প্রঃ। লেন্স কত রকম হয়?

লেন্স সাধারণভাবে দুরকমের হয়: উত্তল ও অবতল। উত্তল লেন্সের মাঝখানের অংশ ধারের চেয়ে পুরু থাকে আর অবতল লেন্সের মাকখানের অংশ পাতলা ও ধারের দিকে পুরু। এই দু ধরনের লেন্সকে প্রতিটির ক্ষেত্রে তিনভাগে ভাগ করা যায় যেমন উত্তলের ক্ষেত্রে উভ-উত্তল, সমতল-উত্তল, উত্তল-অবতল। তেমনই আবার অবতলের ক্ষেত্রে উভ-অবতল, সমতল-অবতল ও অবতল-উত্তল।।

প্রঃ। উত্তল লেন্সকে অভিসারী ও অবতল লেন্সকে অপসারী বলা হয় কেন?

কোন উত্তল লেন্সকে অসংখ্য ছােট ছােট প্রিজমের সমষ্টি বলে ধরা যায়। আমরা জানি প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আলােকরশ্মি প্রিজমের ভূমির দিকে বেঁকে যায়। লেন্সের উপর তাই আলােকরশ্মিগুচ্ছ পড়ার পর অভিসারী হয়। এই জন্য উত্তল লেন্সকে অভিসারী বলে । অবতল লেন্সকেও অসংখ্য প্রিজমের সমষ্টি বলে ধরা যায়। এক্ষেত্রেও রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর একটি বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে মনে হয়। এই জন্যই অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলে। 

প্রঃ। লেন্স সূত্র কি?

লেন্সের ক্ষেত্রে বস্তু দূরত্ব, প্রতিবিম্ব দূরত্ব ফোকাস দূরত্বের সম্পর্ককে লেন্স সূত্র বলা হয়। উত্তল ও অবতল দুরকম লেন্সের ক্ষেত্রেই সূত্রটি হল: 1v = 1u = 1f

যেখানে u = বস্তুর দূরত্ব, v = প্রতিবিম্ব দূরত্ব ও f = ফোকাস দূরত্ব। 

প্রঃ। লেন্সের ক্ষমতা কাকে বলে? এর একক কি?

লেন্সের ক্ষমতা হল এর উপর আপতিত রশ্মিকে অভিসারী বা অপসারী করার ক্ষমতার পরিমাপ। উত্তল লেন্স রশ্মিকে অভিসারী আর অবতল লেন্স অপসারী করে। লেন্সের ফোকাস দূরত্ব কম হলে আলােক রশ্মিকে অভিসারী ' বা অপসারী করার ক্ষমতা বেশি হয় আর ফোকাস দূরত্ব বেশি বলে অভিসারী বা অপসারী করার ক্ষমতা কম হয়। অর্থাৎ লেন্সের ক্ষমতা এর ফোকাস দূরত্বের ব্যস্তানুপাতী। 

লেন্সের ক্ষমতা D হলে, D = 1f। 

লেন্সের ক্ষমতার নাম ডায়পটার।

অর্থাৎ ক্ষমতা ডায়পটার = 100f যখন f = ফোকাসদূরত্ব (সে. মিটারে)। 

প্রঃ। কোন বস্তু ভ ও ২ভ দূরত্বে থাকলে প্রতিবিম্ব হবে (সদ, অবশীর্ষ ও খুবই ছােট,

(খ) সদ,অবশীর্ষ ও বস্তু অপেক্ষা আকারে বড়. 

(গ) সদ, অবশীর্ষ ও বস্তুর আকারের সমান। এর কোনটি ঠিক?  

(খ) ঠিক। 

প্রঃ। শূন্য মাধ্যমে আলােকের বেগ কোন রাশির উপর নির্ভরশীল? 

(ক) তরঙ্গ দৈর্ঘ্য,

(খ) কম্পাঙ্ক, 

(গ) উৎসের বেগ, 

(ঘ) কোনটাই নয়। 

উত্তরঃ (ঘ) কোনটাই নয়। 

প্রঃ। একটি উত্তল লেন্স থেকে 80 সে.মি. দূরে কোন বস্তু রাখলে আর লেন্সের ফোকাস দূরত্ব =26.66 সে. মি. হলে 

(ক) সদ্ প্রতিবিম্ব গঠিত হবে 50 সে.মি. দূরে, 

(খ) 40 সে.মি. দূরে-এর কোনটি ঠিক? . 

উত্তরঃ (খ) ৪০ সে.মি. দূরে। 

প্রঃ। প্রিজম কাকে বলে? 

দুটি সমতল পৃষ্ঠ, যে কোন কোণে আনত থেকে কাচ বা কোন স্বচ্ছ মাধ্যমে কিছুটা অংশ সীমাবদ্ধ করলে তাকে প্রিজম বলে। প্রিজমের মােট পাচটি তল থাকে। এর তিনটি আয়তাক্ষেত্রের আকারে আর দুটি ত্রিভূজ আকারের। 

প্রঃ। আলােকের বিচ্ছুরণ কি? বর্ণালী কাকে বলে?

• কোন আলােক মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক আলাের বর্ণের উপর নির্ভর করে। প্রিজমের মধ্য দিয়ে আলাে পাঠালে এর বিচ্যুতি মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্কের উপর নির্ভর করে। বিভিন্ন আলাে প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসৃত হয়ে বিভিন্ন বিচ্যুতি নিয়ে প্রিজম থেকে বেরিয়ে আসে। বহুধর্মী রশ্মিগুচ্ছের বিভিন্ন বর্ণে বিভাজিত হওয়াকে। আলােকের বিচ্ছুরণ বলা হয় ।

প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের ফলে সাদা আলাে থেকে সাতটি মূল বর্ণের আলােক পাওয়া যায়। এটাই হল বিচ্ছুরণ। সাতরঙের যে সমম্বয় পর্দায় গঠিত হয় তাকেই বলে বর্ণালী। সনাতটি রঙের যে ছবি পর্দায় গঠিত হয় তাতে নিচের দিক থেকে উপরের দিকে পরপর সাজানাে থাকে বেগুনী (Violet), নীল (Indigo), আকাশী (Blue), সবুজ (Green), হলুদ (Yellow), কমলা (Orange) ও লাল (Red), ইংরেজিতে রঙগুলাের আদ্যক্ষর দিয়ে Vibgyor কথাটা বলা হয়। বর্ণালী শুদ্ধ বা অশুদ্ধ হয়। একটি আলােকরশ্মি প্রিজমে পড়লে বর্ণালী দেখা যায় কিন্তু বাস্তবে এক আলােকরশ্মি একগুচ্ছ। আলােকরশ্মিই থাকে। ফলে প্রত্যেক রশ্মিই বর্ণালী গঠন করায় একটার উপর আর একটা পড়ে ও নানা বর্ণ মিশে যায়। একে বলে অশুদ্ধ বর্ণালী ।

যে বর্ণালীতে এ রকম মিশ্রণ হয় না তাই শুদ্ধ বর্ণালী। 

প্রঃ। ফ্রনহােফার রেখা কি?

সূর্য থেকে যে বর্ণালী আসে সেটা লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে সাত বর্ণের বর্ণালীর মধ্যে অসংখ্য কালাে রেখা থাকে। এই কালাে রেখার স্থানও নির্দিষ্ট। সৌর বর্ণালী আসলে কালাে রেখা শােষণ বর্ণালী। এই রেখাকে বলা হয় ফ্রনহােফার রেখা। 

No comments

Powered by Blogger.